সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, বিবিধ

মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩

ঘুম থনে উঠিয়া দামান্দে না খাইন দানা পানি



ঘুম থনে উঠিয়া দামান্দে না খাইন দানা পানি রে
আইজকে রাইতে স্বপ্নে দেখছইন কমলা সুন্দরী রে

লাল চিরন ডাউকের উপর



লাল চিরন ডাউকের উপর
পাইকে লুটে পানিরে
রংগিলা দামান্দে খুঁজইন

অ’রিণ (হরিণ) শিকারে যাইবায় নি



অ’রিণ (হরিণ) শিকারে যাইবায় নি বা রাজা
পন্থে শুনি আজব বেলুয়ার কান্দন গো।

বেলুয়া গো কেইরে দিলা মন।




বেলুয়া গো কেইরে দিলা মন।
আ’রাইয়া মাথার টিকলী তুকাইন বাজুবন

নিশি স্বপনে দেখিয়া আইছি



নিশি স্বপনে দেখিয়া আইছি
কমলা সুন্দরী গো।
গিয়া কইমু আল্লা গো মাইজী
ফ’রির বিদায় কর গো।

আ’টও (হাটও) পিছলা, ঘাটও পিছলা




আ’টও (হাটও) পিছলা, ঘাটও পিছলা আরও পিছলা মাটি গো
এমনও যন্ত্রণার মাঝে কেমন করে রই গো।

আ’ওরিয়ার (হাওরিয়ার) দেশেরে হাজার চাম্পা ডাল রে



আ’ওরিয়ার (হাওরিয়ার) দেশেরে হাজার চাম্পা ডাল রে
চাম্পায় মেলে হাজার হাজার ফুল রে

হাতে মেন্দি সাজাই চল গো সখী,



হাতে মেন্দি সাজাই চল গো সখী, সকলে মিলিয়া
কাইল দুপুরে দিমু আমরা কইন্যারে তুলিয়া

সাধু যে যাইতায় রে




সাধু যে যাইতায় রে ছয় মাসের বাণিজ্যে রে
আমার লাগি কিইন্যা (কিনিয়া) আনবায় উচা গাছের গুটা রে।

আ’ট্টিয়া (হাট্টিয়া) যাইতে পন্থে দুলা



আ’ট্টিয়া (হাট্টিয়া) যাইতে পন্থে দুলা
রইদে পেরেশান অইলা না রে (হইলা না রে)

লঞ্চ চলে ধীরে ধীরে



লঞ্চ চলে ধীরে ধীরে
মোটর চলে পলকে
মোটরের ভিতর সামাইয়া দেখ
কিসের বাজনা বাজে

বিয়ার লাগল উলমতি



বিয়ার লাগল উলমতি
দামান্দে করইন মতি খেতি

বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

দামান আইছইন বিয়া করতা




দামান আইছইন বিয়া করতা কইন্যারে করো সাজন
বাইরম বাইরম করে আমার মন

কইন্যা গো আ’রির ঘরে না যাইও



কইন্যা গো আ’রির ঘরে না যাইও
প’রির ঘরে না যাইও

গুয়াও না গুরছি গুরছি



গুয়াও না গুরছি গুরছি পানও না পাতুরী
সুনাই কাঠলে পালাইছে মুজি।

রসের ভাবী গো



রসের ভাবী গো কেমন করে বাসর ঘরে যাই
মন বলে পাখা থাকলে উড়িয়া বেড়াই

বিদেশ হইতে আইলা নৌশারে



বিদেশ হইতে আইলা নৌশারে
নৌশা বিয়ার পাগল হইয়া

বরণ বর গো আসিয়া



বরণ বর গো আসিয়া
গেইটে আইলা নয়া কন্যা লাল শাড়ি পরিয়া

বিয়ার কবুল পড়াও আজি কাবিন করিয়া



বিয়ার কবুল পড়াও আজি কাবিন করিয়া
এক কাবিনে বান্ধ দুইজন শক্ত করিয়া।

দুলাভাই আপন করিয়া নাও




দুলাভাই আপন করিয়া নাও
নয়া শালী, নয়া দামান তুমি লইয়া যাও।

তোমরা দেখ গো আসিয়া



তোমরা দেখ গো আসিয়া
নয়া নৌশা আইলা আজি সাজিয়া গুজিয়া।

তুমি সাজ গো রাই ধনি,



তুমি সাজ গো রাই ধনি, বান্ধ মোহন বেণী
বেণীতে ধইরাছে ফণি।

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

কই গেলায় ভাবী গো সময় গইয়া যায়



কই গেলায় ভাবী গো সময় গইয়া যায়
বাটা হলুদ জলদি আনো মাখো আমার গায়।

অ’স্থির উপর বসিয়া রাজা



অ’স্থির উপর বসিয়া রাজা  গো
দামান ভাবুইন মনে মনে

যে গাঙ্গে ইলিশা থাকে ঝালো টানে জাল



যে গাঙ্গে ইলিশা থাকে ঝালো টানে জাল
সায়রে পাইয়া জাল গুংগুরে টানে-
মাছ ইলিশারে।

মহারাজা ঘোড়া দৌড়াইন সাগর দিঘির পারে



মহারাজা ঘোড়া দৌড়াইন সাগর দিঘির পারে গো
সাগর দিঘির পারে।

বাদ্যি বাজে আমার আনোলে



বাদ্যি বাজে আমার আনোলে
বাদ্যি বাজে আমার বিনোলে

এলান গাছে ডেলান গো দিয়া



এলান গাছে ডেলান গো দিয়া বাজায় রঙের বাঁশী
কি সুন্দর ময়না গো

এলাইন গাছ ডেলাইন দিয়া



এলাইন গাছ ডেলাইন দিয়া
ময়না গোসল করে।

পা’ড়তনা আইছন পা’ড়িয়া কুকিলরে



পা’ড়তনা আইছন পা’ড়িয়া কুকিলরে
নানান বুলি বুলছেরে-

টান দিয়া তুলিলাম গো টানডাই নদীর জলে



টান দিয়া তুলিলাম গো টানডাই নদীর জলে
কই গেলা গো দাদা-দাদী গো দামান্দ তুলো আয়া।

ছোট ছোট ঘোড়া নিল



ছোট ছোট ঘোড়া নিল
ঘোড়ার মুখে জিন জুড়িল

সোনার বান্ধা জুড় কলসি



সোনার বান্ধা জুড় কলসি
 রূপার বান্ধা কান্দা লো

কালা কালা কুকিল কালা হায়রে



কালা কালা কুকিল কালা হায়রে
কালা মাথার কেশ

ছড়ক দিয়া হাইট্যা যায়



ছড়ক দিয়া হাইট্যা যায় ছিফাই দামান
বাজারের দিগে চাইয়া।

বিয়ার কালা কাইটা কালাচান গো



বিয়ার কালা কাইটা কালাচান গো
বিয়ার মারুল গারে

আপনারি নৌকা ভাইরে পবনেরী বৈঠা



আপনারি নৌকা ভাইরে পবনেরী বৈঠা
মাঝি ভাইরে পবনেরী বৈঠা।

অস্তে অস্তে বাওরে নৌকা



অস্তে অস্তে বাওরে নৌকা মায়ের কান্দন শুনি
মায়ের কান্দনে উঠে ছলকে পানি।

আমের তলায় ঝামুর ঝুমুর



আমের তলায় ঝামুর ঝুমুর কলার তলায় বিয়া
আইলারে নয়া জামাই মটুক মাথাৎ দিয়া

আপার হবে বিয়া হাতে মেন্দি দিয়া



আপার হবে বিয়া হাতে মেন্দি দিয়া
আজকে হবে গায়ে হলুদ

ভোজনে বসিলা গৌরাচাঁদরে



ভোজনে বসিলা গৌরাচাঁদরে হরষিত হৈয়া
চারিদিগে বসে সবে মণ্ডলী করিয়া।

আয় গো তোরা সবে মিলে



আয় গো তোরা সবে মিলে যত সখিগণ
গঙ্গার ঘাটে স্নানে যায়  লক্ষ্মী-নারায়ণ।

আরে স্নানে বসিলা লখাইরে



আরে স্নানে বসিলা লখাইরে বিপুলা সহিতে
নারীগণে গায় গীত বড় হরষিতে।

সাজাও গো সজনী, গিরিরাজ নন্দিনী



সাজাও গো সজনী, গিরিরাজ নন্দিনী
বান্ধ গো বিনোদ বেণী

আরে ও রসের কানাইয়া



আরে ও রসের কানাইয়া
আজি তুমারে দিব সাজাইয়া

দেখ না গো আসিয়া



দেখ না গো আসিয়া
আজকে আপার বিয়ে হবে কবুল করিয়া

আইলা নৌশা কিসের গন্ধ পাইয়া



আইলা নৌশা কিসের গন্ধ পাইয়া
দুপুরবেলা আইলা নৌশা বরযাত্রী লইয়া।

দামান্দের উপরে চঞ্চল পাখি ঘুরে



দামান্দের উপরে চঞ্চল পাখি ঘুরে
সাজাও দামান তুমরা আনাসে বিলাসে

ইন্দিল মন্দির ঘরে আজল কুঠায় বসিয়া



ইন্দিল মন্দির ঘরে আজল কুঠায় বসিয়া
পাশা খেলইন গো দামান বিবি সামনে লইয়া।

বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩

লাউয়া উড়ে আকাশে হাইরকেল জ্বলে বাতাসে



লাউয়া উড়ে আকাশে হাইরকেল জ্বলে বাতাসে
ফাম লাইট জ্বলে গো সুন্দর কইন্যার দেশে।

মেঘ নাই মোর আন্দাইরা রাত্রি নায়ে আটু পানি



মেঘ নাই মোর আন্দাইরা রাত্রি নায়ে আটু পানি
কে কে যাইবা দুলা মিয়ার সাথে পিছন নায়ের পানি।

আমার বাড়ি যাইও তুমি



আমার বাড়ি যাইও তুমি
আমার বুয়াইর বিয়া লো ভইনারী
কাইল বিয়ানে আইবা দুলা ভাই।

ইন্দিল মঞ্জিল ঘরে কাজল কৌটা ঘিরিয়া



ইন্দিল মঞ্জিল ঘরে কাজল কৌটা ঘিরিয়া
পাশা খেলাইন বা দামান্দে বিবি সামনে লইয়া

আয়না জ্বলে আশিক না জ্বলে গো লিলাই



আয়না জ্বলে আশিক না জ্বলে গো লিলাই
জ্বলে মোমের বাতি।

আইছে দামান রুমাল মুখে



আইছে দামান রুমাল মুখে
কইন্যা কান্দে দুরু দুরু বুকে

নাইলার শাক তুলিতে



নাইলার শাক তুলিতে
করভুলারে খাইলো জংলার বাঘে
আমার আউশের করভুলারে ।

ছুডবেলার বনেলা ছেরা বনে বনে থাকে।




ছুডবেলার বনেলা ছেরা বনে বনে থাকে।
রাইত অইলে বনেলা ছেরা কইন্যার দাদীরে ঠারে

আম গাছের তলে চমক কালা



আম গাছের তলে চমক কালা
আমও নাইসে টুকাই হায় গো বিবি।

ফুল না ফুটি সাইরী না সাইরী



ফুল না ফুটি সাইরী না সাইরী
মা গো, ভোমরা গুনগুন করে।

লেম্বু তলে আমার সিফাই দুলা সাজে গো



লেম্বু তলে আমার সিফাই দুলা সাজে গো
লেম্বু তুলিও না।
রান্ধা ঘরে সামাইমু

আইলারে নয়া দামান্দ আসমানের তেরা



আইলারে নয়া দামান্দ আসমানের তেরা
বিছানা বিছাইয়া দেও -২
শাইল ধানের নেরা
দামান্দ বও দামান্দ বও।

নৌকার ঝিলিমিলি দেখিয়া



নৌকার ঝিলিমিলি দেখিয়া
বৈঠার গাফুর গুফুর শুনিয়া
কান্দুইন গো অবুঝ লিলাই বাবাজীর কুলে বসিয়া।

মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩

হিন্দুধর্ম ও মূল্যবোধ



যা আমাদের ধারণ করে তা-ই আমাদের ধর্ম। যা ধারণ করলে সমাজ ও ব্যক্তির মঙ্গল হয় তাকে ধর্ম বলা হয়। সত্যিকার অর্থে ধর্ম কল্যাণকর, শুধু মানুষের জন্য নয় সমগ্র পৃথিবীর জন্যই হিতকর, মঙ্গলকর। পৃথিবীতে

স্রষ্টা ও সৃষ্টি এবং হিন্দুধর্ম

বৈচিত্র্যময় আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশ। ওপরে অনন্ত আকাশ। সেই আকাশে চন্দ্র-সূর্যসহ কত গ্রহ-উপগ্রহ রয়েছে, রয়েছে অগণিত জ্যোতিষ্ক।

মহানুভবতা : বশিষ্ঠের মহানুভবতা


মানুষের মনে সুপ্রবৃত্তি ও কুপ্রবৃত্তি, ভালো ও মন্দ দুইই আছে। তেমনি আছে সংকীর্ণতা ও মহানুভবতা । মহানুভবতার অর্থ হলো অনুভবের মহত্ব বা বিরাটত্ব-উদারচিত্ততা । ‘উদারচরিতানাং তু বসুধৈব কুটুম্বকম্ ।’ যিনি উদার চরিত্রের অধিকারী বা মহানুভব , সমস্ত

এসো মা দুর্গা দুর্গতিনাশিনী


ষড়ঋতুর বাংলাদেশে শরৎ এক বৈচিত্রময় ঋতু। শিউলী ঝরা সকাল, নদী তীরে কাশবন, আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, হাওড়-নদী-বিল-ঝিলে বর্ষার দাপট কাটিয়ে একটু প্রশান্তি। প্রকৃতি আর মানুষের মন আনন্দে ভরপুর। আসে শারদোৎসব-শরৎকালীন দুর্গা পূজা।

মা দুর্গা : সনাতন ধর্মের মূর্ত প্রতীক


ব্রহ্ম বা ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজিত। প্রতিটি প্রাণীর সমগ্র সত্তায়, প্রতিটি প্রাণীর সমস্ত ইন্দ্রিয়ের মধ্যেও তাঁর উপস্থিতি। এই সর্বব্যাপকতাই সনাতন ধর্ম বা হিন্দু ধর্মের মূল সুর। আর্য ঋষিরা এই সর্বব্যাপক-সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আরাধনা মাতৃরূপেও করেছেন। শাস্ত্র

শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

মহালয়ার তাৎপর্য


আশ্বিন মাস। দিগন্তজোড়া সাদা মেঘের ছড়াছড়ি। নদীতীরে শূচিশুভ্র কাশবন। শিউলী ঝরা সকাল। এসেছে আশ্বিন কৃষ্ণপক্ষের অন্তিম তিথি; সর্বপিতৃ অমাবস্যা- মহালয়া। মহালয়া এলেই যেন বাংলার মাটি-নদী-আকাশ মাতৃপূজার মহালগ্নকে বরণ করতে প্রস্তুত হয়।

গিরি! প্রাণগৌরী আন আমার


দুর্গা পূজা বাঙালি হিন্দুর প্রাণের উৎসব-একথা সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করেন। কিন্তু কখন, কোথায় এ উৎসবের শুরু হয় তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে পূজার ক্রিয়াকাণ্ড, উপচারাদি ও লোকায়ত চেতনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়; আদি যুগে বাংলাদেশেই হয়েছিল

শুভ দীপাবলী


দীপাবলী অর্থ আলোর উৎসব। এ-কে দেওয়ালীও বলা হয়। এর সময়কাল কার্তিক মাসের অমাবস্যার সন্ধ্যা। শুধু ভারতবর্ষ নয়, পৃথিবীর সর্বত্র এ উৎসব পালিত হয়। তবে আলো-কে আমন্ত্রণ-বরণ করার উপাচার অনেকটা পৃথিবীর সর্বব্যাপী । বৌদ্ধ, জৈন ও খৃস্টানরাও

আদি দেবী শারদীয় দুর্গা


বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দেবী এখানে মৃন্ময়ী প্রতিমায় স্বপরিবারে পূজিতা। দশভুজা হলেও এক নারীমূর্তি, মাতৃমূর্তি। কিন্তু ‘দুর্গা’ কে? ‘দুর্গ’-শব্দের শেষে ‘আ’-কার যুক্ত হয়ে ‘দুর্গা’ শব্দ গঠিত। ‘দুর্গ’-অর্থ- দৈত্য, মহাবিঘ্ন, ভববন্ধ, কুকর্ম,

বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও হিন্দুধর্ম


ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়। তিনি সকল কিছুর নিয়ন্তা । তিনিই সৃষ্টি কর্তা । এই বৈচিত্র্যময় পৃথিবী, তিনিই সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি বিস্তারের ইচ্ছায় তিনি ব্রহ্মারূপে প্রথম পুরুষ স্বায়ম্ভুব মনু ও নারী শতরূপাকে সৃষ্টি করেছিলেন। তাই তো মনুর সন্তান বলে আমরা মানব নামে

দেশপ্রেম : কার্তবীর্যার্জুনের দেশপ্রেম


দেশের প্রতি ভালবাসাকে বলা হয় দেশপ্রেম । নিজের দেশের প্রতি মানুষের প্রগাঢ় ভালোবাসা থাকে, থাকে মমত্ববোধ। স্বদেশের প্রতি এই ভালোবাসা ও মমত্ববোধই দেশপ্রেম। দেশপ্রেমও ধর্মের অঙ্গ। শাস্ত্রে বলা হয়েছে- ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।’ অর্থাৎ মা ও মাতৃভূমি স্বর্গের চেয়েও বড়। সুগভীর দেশপ্রেমের আবেগে কবির কন্ঠে ধ্বনিত হয়- ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা।’

সৎসাহস : অভিমন্যুর সৎসাহস


‘সাহস’ শব্দটির মানে হচ্ছে ভয়শূন্যতা, নির্ভীকতা। বিপজ্জনক কাজে উদ্যমের নামও সাহস। এই সাহস ভালো বা সৎ কাজে অথবা মন্দ বা অসৎ কাজে উভয় ক্ষেত্রেই দেখানো যেতে পারে। তবে সৎ বা মঙ্গলজনক কাজে যে সাহস দেখানো হয়, তাকে বলা হয় সৎসাহস । যখন কেউ দুর্বলের উপর অত্যাচার করেন, তখন সৎসাহস নিয়ে দুর্বলের পক্ষে দাঁড়ানো উচিত। শরণাগতকে তাড়নাকারীর হাত থেকে রক্ষা

মানবতাবোধ


মানবতা মানুষের একটি গুণ বা ধর্ম। মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে । অপরের দুঃখে তার প্রাণ কেঁদে ওঠে। বিপদাপন্নের পাশে দাঁড়ায়,

রন্তিদেবের মানবতাবোধ


অনেক অনেককাল আগে এক দেশে এক রাজা ছিলেন। নাম তার রন্তিদেব। তিনি শুধু রাজা ছিলেন না, ছিলেন রাজার রাজা মহারাজা। সম্রাট। কিন্তু সম্রাট হয়েও রন্তিদেব পার্থিব বিষয়ের প্রতি আসক্ত নন। শ্রীকৃষ্ণের চরণকেই তিনি একমাত্র সম্পদ বলে জ্ঞান করেন।

সেবা : সিদ্ধার্থের জীব সেবা


সেবা কথাটির নানা রকম অর্থ হয়। সেবা বলতে বোঝায় পরিচর্যা, যেমন - অতিথি সেবা, জীবসেবা । সেবা মানে শুশ্রূষা, যেমন - রোগীর সেবা । সেবার একটি অর্থ- উপাসনা, যেমন- ঠাকুর সেবা । এক কথায় অপরের সন্তোষ বিধানের জন্য যে কল্যাণকর কাজ করা হয় তাকেই বলা হয় সেবা । কাউকে কোন কিছু দান করেও সেবা করা যায়। তবে দান আর সেবা পুরোপুরি এক নয়। দানের ক্ষেত্রে কিছু না কিছু দিতে

প্রীতি : শ্রীকৃষ্ণের বন্ধুপ্রীতি


প্রীতি একটি মহৎ গুণ। প্রীতি বলতে সন্তোষ, তৃপ্তি, অনুরাগ, বন্ধুত্ব প্রভৃতি বোঝায়। প্রীতি জীবনকে সুন্দর ও সহনীয় করে এবং সমাজকে শান্তিময় করে তোলে। স্নেহ, ভক্তি ও প্রীতি মূলত অনুরাগ বা প্রাণের টানকে বোঝায় । এই প্রীতি যখন ছোটদের প্রতি দেখানো হয়, তখন তাকে বলে স্নেহ। আবার যখন গুরুজন বা ঈশ্বরের প্রতি দেখানো হয়, তখন তাকে বলে ভক্তি। বন্ধু স্থানীয় এবং বন্ধুদের প্রতি প্রাণের

ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা


যা আমাদের ধারণ করে তা-ই আমাদের ধর্ম। যা ধারণ করলে সমাজ ও ব্যক্তির মঙ্গল হয় তাকে ধর্ম বলা হয়। সত্যিকার অর্থে ধর্ম কল্যাণকর, শুধু মানুষের জন্য নয় সমগ্র পৃথিবীর জন্যই হিতকর, মঙ্গলকর। পৃথিবীতে যত প্রকার অকল্যাণকর কাজ হয়েছে তা ধর্মের নামে হলেও সেখানে ধর্ম ছিল না, ছিল অধর্ম। সহিষ্ণুতা, ক্ষমা, চিত্তসংযম, অস্তেও অর্থাৎ চুরি না করা, শুচিতা, ইন্দ্রিয়সংযম, ধী, বিদ্যা,

কর্মযোগ ও ধর্মব্যাধ


কর্মফলের আশা না করে কর্তব্য জ্ঞানে অপরের কল্যাণের জন্য কর্ম সম্পন্ন করা ঈশ্বর আরাধনার সামিল। এ কে কর্মযোগ বলা হয়। কর্মযোগে স্বকর্মকে প্রাধান্য দেয়া হয়। স্বকর্ম মানে নিজের কর্ম। নিষ্কামভাবে ঈশ্বরার্পণ বুদ্ধিতে স্বকর্ম সম্পন্ন করলে এ ধরনের কর্ম দ্বারাই

হিন্দু ধর্মের কতিপয় সাধারণ বৈশিষ্ট্য


ঈশ্বরে বিশ্বাস - হিন্দুধর্ম বিশ্বাস করে- ঈশ্বর আছেন, তিনি এক এবং অদ্বিতীয়। সৃষ্টির আদিতে একমাত্র তিনিই ছিলেন, আর কিছুই ছিল না। বিশ্বের সবই ঈশ্বর হতে উৎপন্ন হয়েছে, আবার তিনিই চরাচর বিশ্ব ব্যাপিয়া আছেন। তিনি সর্বভূতের অন্তরাত্মা। তিনি সমগ্র বেদময়। বেদাদি শ্রাস্ত্র তাঁরই মহিমা কীর্তন করে। সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের কর্তা একমাত্র তিনিই। তিনি মহাশক্তি। শক্তি শব্দটি স্ত্রীবাচক তাই

চণ্ডী


চণ্ডী মার্কণ্ডেয় পুরাণের অংশ। মার্কণ্ডেয় পুরাণের ৮১ থেকে ৯৩ অধ্যায় পর্যন্ত ১৩টি অধ্যায়ের নামই ‘চণ্ডী’। দেবীমাহাত্ম্য ও দুর্গাসপ্তসতী চণ্ডীর অপর দু’টি নাম। এতে ৭০০ মন্ত্র অথবা ৫৭৮টি শ্লোক আছে। সমগ্র তন্ত্রশাস্ত্রের সার চণ্ডীর মধ্যে নিহিত। তাই শক্তি

গীতা


গীতার পুরো নাম শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা। এটি মহাভারতের ভীষ্ম পর্বের একটি অংশ। এতে ১৮টি অধ্যায় আছে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের প্রাক্কালে বিপক্ষে আত্মীয়-স্বজনদের দেখে অর্জুন যুদ্ধ করতে চাইলেন না। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে অনেক উপদেশ দেন। সেটাই গীতা।

মহাভারত


মহাভারত একখানা বিশাল গ্রন্থ। এটি সংস্কৃত ভাষায় রচনা করেছেন ব্যাসদেব। তাঁর মূল নাম কৃষ্ণদ্বৈপায়ন। কাশীরাম দাস, কালীপ্রসন্ন সিংহ এবং আরও অনেকে বাংলা ভাষায় মহাভারত অনুবাদ করেছেন। তন্মধ্যে কাশীরাম দাস অনুদিত মহাভারত বেশ জনপ্রিয়। মহাভারত-এর মূল উপজীব্য বিষয় হলো কৌরব ও পাণ্ডবদের গৃহবিবাদ এবং কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পূর্বাপর ঘটনাবলি। তবে এই আখ্যান ভাগের

রামায়ণ


বেদ, উপনিষদ প্রভৃতির ন্যায় রামায়ণও একটি উল্লেখযোগ্য ধর্মগ্রন্থ। মহর্ষি বাল্মীকি সংস্কৃত ভাষায় রামায়ণ রচনা করেছেন। রামায়ণকে আদি কাব্যও বলা হয়। স্বয়ং ভগবান ত্রেতাযুগে অযোধ্যার রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্ররূপে ধরাধামে অবতীর্ণ হন। তিনি জগতে

তন্ত্রশাস্ত্র


ঈশ্বরকে আদ্যাশক্তিরূপে চিন্তা করার উপদেশ তন্ত্রশাস্ত্রে রয়েছে। ঈশ্বরের নারীরূপ ভাবনা করে তাঁকে মাতৃরূপে যাঁরা উপাসনা করেন তাদের বলা হয় শাক্ত। শাক্তগণ বিশ্বাস করেন মহামায়া বিশ্বব্যাপিনী হলেও নারীমূর্তিতে তাঁর সমধিক প্রকাশ। নারী জগদম্বারই জীবন্ত

পুরাণ


‘পুরাণ’ শব্দটির সাধারণ অর্থ প্রাচীন। কিন্তু এখানে শব্দটি এ অর্থে ব্যবহৃত হয় নি। যে ধর্মগ্রন্থে সৃষ্টি ও দেবতার উপাখ্যান, ঋষি ও রাজাদের বংশ পরিচয় প্রভৃতি আলোচনা করা হয়েছে, তাকে বলে পুরাণ। এসবের মাধ্যমে বেদভিত্তিক হিন্দুধর্ম ও সমাজের নানা কথা বলা

উপনিষদ


বেদের দু’টো ভাগ- কর্মকাণ্ড ও জ্ঞানকাণ্ড । কর্মকাণ্ডে কর্ম বিষয়ক এবং জ্ঞানকাণ্ডে জ্ঞান বিষয়ক উপদেশ বিদ্যমান । এই জ্ঞানকাণ্ডই হচ্ছে উপনিষদ। উপনিষদকে ব্রহ্মবিদ্যা এবং গূঢ় বিদ্যাও বলা হয়ে থাকে। এতে আছে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের উপদেশ। উপনিষদ মানে গুরুর

বেদ


বেদ ঈশ্বরের বাণী, যা প্রাচীন ঋষিদের কাছে প্রতিভাত হয়েছিল। ঋষিগণ শিষ্যদেরকে মুখে মুখে বেদ শিক্ষা দিতেন। কালক্রমে ঋষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব বেদ সংগ্রহ করে লিখিত রূপ দেন। তিনি বেদের মন্ত্রগুলোকে চার ভাগে ভাগ করেন। ফলে বেদ হয়ে যায় চারটি। চারটি

নিত্যকর্ম


নিত্যকর্ম প্রতিদিনের কাজ। নিত্যকর্ম ধর্মচর্চার একটি অঙ্গ। ধর্মচর্চা করতে গেলে শরীর ও মন সুস্থ থাকতে হয়। নিত্যকর্মের ফলে শরীর ও মন সুস্থ থাকে। এজন্য প্রতিদিন নিয়ম মেনে কিছু কর্ম করতে হয়। এই কর্মগুলোই নিত্যকর্ম। শাস্ত্র অনুসারে নিত্যকর্মের ক্ষেত্রে কর্ম

নিরাকার উপাসনা


নিরাকার উপাসনা নিরাকার উপাসনায় ভক্ত নিজের অন্তরে ঈশ্বরকে অনুভব করেন। ঈশ্বরের নাম জপ করেন। তাঁর নাম কীর্তন করেন।

সাকার উপাসনা


সাকার উপাসনা ‘সাকার ’ অর্থ যার আকার বা রূপ আছে। আকার বা রূপের মাধ্যমে ঈশ্বরের আরাধনা করাই সাকার উপাসনা। ঈশ্বরের

বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

উপাসনা ও নিত্যকর্ম এবং ধর্মগ্রন্থ সেশন প্লান


উপাসনা ও নিত্যকর্ম এবং ধর্মগ্রন্থ সেশন প্লান 

অধিবেশন - ২ : উপাসনা ও নিত্যকর্ম এবং ধর্মগ্রন্থ 

মূলভাব : ঈশ্বর মানুষ,জীব, জগৎ, প্রকৃতি সব কিছুর স্রষ্টা ও নিয়ন্তা। তিনি সর্বত্র বিরাজমান, নিরাকার, এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন দ্বিতীয় সত্ত্বা নেই তবে তিনি বিভূতি প্রকাশের জন্য সাকার হন আবার লীলা প্রকাশের জন্য জীবদেহ ধারণ করেন। তাই নিরাকার, সাকার

স্রষ্টা ও সৃষ্টি এবং হিন্দুধর্ম সেশন প্লান


স্রষ্টা ও সৃষ্টি এবং হিন্দুধর্ম সেশন প্লান

 অধিবেশন- ১: স্রষ্টা ও সৃষ্টি এবং হিন্দুধর্ম 

 মূলভাব : আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশ বৈচিত্র্যময় হলেও এর মধ্যে রয়েছে গভীর ঐক্য ও শৃঙ্খলা। ঋতুচক্রের আবর্তন, দিবা-রাত্রির পালাবদল আর গ্রহ-উপগ্রহের একই নিয়মে চলার মধ্যেও এর নিদর্শন রয়েছে। এর মূলে রয়েছেন এক সুমহান স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক। তিনিই

হিন্দুধর্ম ও মূল্যবোধ সেশন প্লান

হিন্দুধর্ম ও মূল্যবোধ সেশন প্লান

 অধিবেশন - ৩ : হিন্দুধর্ম ও মূল্যবোধ 

 মূলভাব : যা আমাদের ধারণ করে তা-ই ধর্ম। ধর্ম ধারণ করলে সমাজ ও ব্যক্তির মঙ্গল হয়, মূল্যবোধ বিকশিত হয়। কোন কাজটি করা

উপাসনা ও নিত্যকর্ম এবং ধর্মগ্রন্থ


   

ঈশ্বর মানুষ, জীব, জগৎ, প্রকৃতি সব কিছুর স্রষ্টা ও নিয়ন্তা। তিনি সর্বত্র বিরাজমান, নিরাকার, এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন দ্বিতীয় সত্ত্বা নেই তবে তিনি বিভূতি প্রকাশের জন্য সাকার হন আবার লীলা প্রকাশের জন্য জীবদেহ