সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, বিবিধ

বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

চণ্ডী


চণ্ডী মার্কণ্ডেয় পুরাণের অংশ। মার্কণ্ডেয় পুরাণের ৮১ থেকে ৯৩ অধ্যায় পর্যন্ত ১৩টি অধ্যায়ের নামই ‘চণ্ডী’। দেবীমাহাত্ম্য ও দুর্গাসপ্তসতী চণ্ডীর অপর দু’টি নাম। এতে ৭০০ মন্ত্র অথবা ৫৭৮টি শ্লোক আছে। সমগ্র তন্ত্রশাস্ত্রের সার চণ্ডীর মধ্যে নিহিত। তাই শক্তি
গ্রন্থসমূহের মধ্যে চণ্ডী এত সারবতী ও সমাদৃতা। চণ্ডীপাঠ দেবী পূজার প্রধান অঙ্গ। চণ্ডীতে দেবী মহামায়ার মাহাত্ম্য ও অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধের বর্ণনা রয়েছে। এই দেবী মহামায়া নিত্যা। সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের কর্ত্রীরূপে স্বয়ং ভগবানই মহামায়া। তিনি মায়া দ্বারা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড মুগ্ধ করে রেখেছেন। মানুষের মধ্যে সুর ও অসুরের যুদ্ধ অর্থাৎ সৎ ও অসৎ প্রবৃত্তির যুদ্ধ সর্বদাই চলছে। মহাশক্তি ঈশ্বরের শরণ নিলে তিনিই ভক্তের রিপু বা অসৎ প্রবৃত্তিগুলো নষ্ট করে দেন। শ্রীশ্রীচণ্ডীতে অসুরদের সঙ্গে বর্ণিত সমর প্রকৃতপক্ষে সাধন সমর। আমাদের মনের অসৎ প্রবৃত্তিকে নিবৃত্ত করে নিয়ত সৎ প্রবৃত্তির অনুশীলন করা উচিত। আধ্যাত্মিক শক্তির সাহায্যে ষড় রিপুর প্রভাব হতে মুক্তির সাধনাই শ্রীশ্রীচণ্ডীর মূল শিক্ষণীয় বিষয়। মার্কণ্ডেয় পুরাণের অংশ হয়েও চণ্ডী পৃথক ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা পেয়েছে। শ্রীমদভগবদগীতার ন্যায় শ্রীশ্রীচণ্ডীও হিন্দুদের নিত্যপাঠ্য গ্রন্থ। পৃথিবীর মানুষের মধ্যে নানা দিক থেকে মিল যেমন আছে, তেমনি আবার অনেক অমিলও আছে। মিলের দিক থেকে যদি দেখি, তাহলে দেখব, সবাই মানুষ। সকলের মধ্যে রয়েছে একই মনুষ্যত্ব। উপাসনার পথ বিভিন্ন হলেও উপাস্য এক এবং অদ্বিতীয়। সকল ধর্মই নিজের মুক্তি এবং জীব ও জগতের মঙ্গল চায়। হিন্দুধর্ম বিশ্বাস করে যে, সকল জীবের মধ্যে আত্মারূপে ঈশ্বর অবস্থান করেন। আর এ বিশ্বাস ধর্মীয় সাম্যবোধ জাগ্রত করার প্রধান সহায়ক। এ কথা মেনে চললে পৃথিবী হবে শান্তিময়-আনন্দময়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন