সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, বিবিধ

বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

নিত্যকর্ম


নিত্যকর্ম প্রতিদিনের কাজ। নিত্যকর্ম ধর্মচর্চার একটি অঙ্গ। ধর্মচর্চা করতে গেলে শরীর ও মন সুস্থ থাকতে হয়। নিত্যকর্মের ফলে শরীর ও মন সুস্থ থাকে। এজন্য প্রতিদিন নিয়ম মেনে কিছু কর্ম করতে হয়। এই কর্মগুলোই নিত্যকর্ম। শাস্ত্র অনুসারে নিত্যকর্মের ক্ষেত্রে কর্ম
সময়ের বিভাগ করা হয়েছে। সেদিক থেকে নিত্যকর্ম ছয় ভাগে বিভক্ত। যথা- প্রাতঃকৃত্য, পূর্বাহ্ণকৃত্য, মধ্যাহ্নকৃত্য, অপরাহ্ণকৃত্য, সায়াহ্নকৃত্য ও রাত্রিকৃত্য। প্রাতঃকৃত্য : সূর্যোদয়ের কিছু আগে ঘুম থেকে উঠতে হয়। তারপর বিছানায় বসে পূর্ব বা উত্তরমুখী হয়ে ঈশ্বর বা দেব-দেবীর স্মরণ করে মন্ত্র পাঠ করতে হয়। অতঃপর শয্যা ত্যাগ করে পৃথিবীকে প্রণাম করে বাইরে এসে সূর্যকে প্রণাম করে তুলসীতলা এবং পিতামাতাকেও প্রণাম করতে হয়। হাতমুখ ধুয়ে পবিত্র হয়ে, পরিষ্কার জামা কাপড় পরতে হয়। স্নান করতে পারলে তো আরও ভাল। পূর্বাহ্ণকৃত্য : প্রাতঃকৃত্যের পরে এবং মধ্যাহ্ন বা দুপুরের পূর্ব পর্যন্ত যে সকল কাজ করা হয় তা-ই পূর্বাহ্ণকৃত্য। এ সময় প্রার্থনা ও পূজা করে দিনের অন্যান্য কাজ-কর্ম করতে হয়। শরীর সবল, সুঠাম ও কর্মদক্ষ করে তোলা ও মানসিক স্থিরতার জন্য প্রাতঃকালে ব্যায়াম ও কিছু যোগাসনও অভ্যাস করা যেতে পারে। তারপর অন্যান্য করণীয় কাজে মনোনিবেশ করতে হয়। মধ্যাহ্নকৃত্য : মধ্য অহ্ন অর্থাৎ দিনের মধ্য ভাগ বা দুপুর। দুপুরের কাজকে বলা হয় মধ্যাহ্নকৃত্য। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে উপাসনা করা, তারপর দুপুরের আহার গ্রহণ করা কর্তব্য। আহারের পরে বিশ্রাম নেয়ার সময় থাকলে কিছু সময় বিশ্রাম নিতে পারলে ভাল হয়। দুপুরে অতিথি এলে তাকে আপ্যায়ন করাও মধ্যাহ্নকৃত্যের মধ্যে পড়ে। অপরাহ্ণকৃত্য : দুপুরের পর সন্ধ্যার পূর্ব পর্যন্ত সময় হচ্ছে অপরাহ্ণ। এ সময়ে যে কাজ করা হয় তাকেই বলে অপরাহ্ণকৃত্য। এ সময় খেলাধুলা, ব্যায়াম বা ভ্রমণ করলে শরীর ভাল থাকে। সায়াহ্নকৃত্য : সায়াহ্ন মানে সন্ধ্যা। সন্ধ্যাকালে হাত, পা ও মুখ ধুয়ে পরিচ্ছন্ন হতে হয়। তারপর ঈশ্বরের উপাসনা করতে হয়। রাত্রিকৃত্য : সন্ধ্যার পর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কাজকে বলে রাত্রিকৃত্য। সন্ধ্যার পর পড়াশুনা ও অন্যান্য করণীয় কাজ করতে হয়। তারপর হাত-মুখ ধুয়ে রাত্রিকালীন আহার গ্রহণ করতে হয়। তারপর দাঁত মেজে ৩/৪ মিনিট বজ্রাসনে বসা যেতে পারে। পরে পড়াশুনা বা কিছু কাজ থাকলে করা যেতে পারে। তারপর নির্দিষ্ট সময়ে ভগবানের ‘পদ্মনাভ’ নামটি স্মরণ করে ঘুমাতে হয়। নিত্যকর্মের ফলে নিয়মানুবর্তিতা শেখা যায়। সময়ের কাজ সময়ে করা যায়। কোন কাজই অসমাপ্ত থাকে না। শরীর- মন ভাল থাকে। যে-কোন কাজে পুরোপুরি মনোযোগ দেওয়া যায়। ফলে জীবনটাই সুন্দর হয়ে ওঠে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন