সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, বিবিধ

বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

কর্মযোগ ও ধর্মব্যাধ


কর্মফলের আশা না করে কর্তব্য জ্ঞানে অপরের কল্যাণের জন্য কর্ম সম্পন্ন করা ঈশ্বর আরাধনার সামিল। এ কে কর্মযোগ বলা হয়। কর্মযোগে স্বকর্মকে প্রাধান্য দেয়া হয়। স্বকর্ম মানে নিজের কর্ম। নিষ্কামভাবে ঈশ্বরার্পণ বুদ্ধিতে স্বকর্ম সম্পন্ন করলে এ ধরনের কর্ম দ্বারাই
সিদ্ধিলাভ হয় -‘স্বকর্মণা তমভ্যর্চ্য সিদ্ধিং বিন্দতি মানবঃ’ (গীতা , ১৮/৪৬)। এ সম্পর্কে ধর্মব্যাধের সাধনার কথা স্মরণ করা যায়। ধর্মব্যাধ নামে এক জন কর্মযোগী ছিলেন । তিনি ছিলেন মাংস বিক্রেতা । দোকানে বসে মাংস কাটেন ও তা বিক্রি করেন। প্রয়োজনবোধে ধর্মের আলাপ করেন। তাঁর প্রাণটি ঈশ্বর চিন্তায় ভরপুর । কিন্তু ব্যাধের পুত্র ব্যাধ বলে তিনি পশুহত্যা ও মাংস বিক্রয় স্বধর্ম হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এ কাজ অপরের নিকট নিন্দনীয় হলেও এটা ব্যাধের স্বকর্ম। ব্যাধ বৃদ্ধ পিতা-মাতার ভরণ পোষণের জন্য এ কাজ অম্লান বদনে করে যাচ্ছেন। এ কাজটি ধর্মব্যাধের কর্মযোগ। তাঁর উপলব্ধিতে ছিল ঈশ্বর তাঁকে দিয়ে যা করাচ্ছেন, তিনি তাই করছেন। এভাবে নিত্য স্বকর্ম পালনের মধ্য দিয়ে ধর্মব্যাধ ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভ করেছিলেন। কর্মযোগ একদিকে কর্মযোগীকে দেয় মুক্তি, অপরদিকে জগৎকে দেয় কল্যাণ। তাই কর্মযোগীর কর্ম হয় নিঃস্বার্থ । বিশ্ব কর্মযজ্ঞে কিছু কর্ম করার সুযোগ পেয়ে কর্মযোগী নিজেকে ধন্য মনে করেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন