শ্রীকৃষ্ণ বর্ণিত ধর্মতত্ত্ব
লেখক : নির্মল চন্দ্র শর্মা
সত্য ও মিথ্যা, হিংসা ও অহিংসা, নীতিশাস্ত্র এবং ধর্ম ও অধর্ম বিষয়ক কর্তব্যতা নিয়ে মানুষ প্রায়শঃই বিভ্রান্ত হয়। কখন কী করা উচিত, কখন কী করা উচিত নয়- এ বিষয়ে অনেক সময় প্রজ্ঞাসম্পন্ন বিচক্ষণ মানুষেরও নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে মহাভারত গ্রন্থের নানা স্থানে আখ্যায়িকা সহকারে চমৎকার যুক্তিযুক্ত মীমাংসা দেখা যায়। তেমনি একটি ক্ষেত্র হচ্ছে কর্ণপর্বের একপঞ্চাশতম অধ্যায় : শ্রীকৃষ্ণার্জুন সংবাদ। মহাবীর কর্ণের সঙ্গে প্রচণ্ড যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত, পরাজিত ও নিজ শিবিরে বিশ্রামরত মহারাজ যুধিষ্ঠির। অনুজ মহাবীর অর্জুন ও তাঁর রথের সারথী শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মহারাজ যুধিষ্ঠিরের কুশল জানতে এলে, যুধিষ্ঠির অর্জুনকে ভীষণভাবে অপমানিত করেন। ফলে সত্য ও মিথ্যা, হিংসা ও অহিংসা বিষয়ে এবং সত্য প্রতিজ্ঞা সম্পর্কে এক জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হয়—সে প্রসঙ্গে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যে অপূর্ব মীমাংসা করেছেন, নীতিসার হিসেবে তা আমাদের পথ প্রদর্শক হয়ে আছে। শ্রীকৃষ্ণ বর্ণিত সেই ধর্মতত্ত্বটি এখানে তুলে ধরা হলো।
মহারাজ যুধিষ্ঠির কর্তৃক তিরস্কার
শোনার পর অর্জুন অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে কঠোর হস্তে টেনে নিলেন তরবারি। দ্রুতপদে কাছে এলেন কৃষ্ণ। উৎকণ্ঠিত ব্যাকুল
কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন- ‘অর্জুন !
তুমি এ তরবারি ধারণ করলে কেন? .... তোমার
যে বধ্য হবে, তেমন লোক ত দেখছি না, তবে প্রহার করার ইচ্ছা করছ কেন? কেনই বা তোমার
চিত্তভ্রম উপস্থিত হলো? অর্জুন ! তুমি ত্বরান্বিত হয়ে মহাতরবারি ধারণ করলে কেন? অতএব তোমাকে জিজ্ঞাসা করি—তুমি এ কি করার ইচ্ছা করেছ?’ [মহাভারতম্ : কর্ণপর্ব ৫১/২-৮]
অগ্রজ ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরের দিকে একটি
অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে বজ্রকঠোর রবে অর্জুন বললেন, “অন্য ব্যক্তিকে গাণ্ডীব দাও-- এরূপ যে লোক আমাকে
নির্দেশ করবে, আমি তার শিরশ্ছেদ করব; এরূপ আমার গুপ্ত প্রতিজ্ঞা আছে। অতএব অমিতপরাক্রম
কৃষ্ণ ! এই রাজা তোমার সমক্ষেই তা আমাকে বলেছেন। সুতরাং আমি তা উপেক্ষা করতে পারি না। অতএব আমি ধর্মভীরু
বলে এই রাজাকে বধ করব; এই নরশ্রেষ্ঠকে
বধ করে আমি প্রতিজ্ঞা রক্ষা করব। যদুনন্দন জনার্দন ! এ জন্যই আমি তরবারি ধারণ করেছি। সুতরাং আমি যুধিষ্ঠিরকে বধ করে সত্যের নিকট অনৃণী (ঋণমুক্তি), নিঃশোক ও নিঃসন্তাপ
হব। তুমিই বা এ সময়ে কি করা উচিত মনে কর? জগৎপিতঃ ! তুমি জগতের ভূত,
ভবিষ্যৎ ও বর্তমান জান। সুতরাং তুমি
আমাকে যা বলবে, আমি তা-ই করব”।[মহাভারতম্ : কর্ণপর্ব ৫১/৯-১৪]
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের কথা শুনে তাঁকে
বারংবার ধিক্কার দিয়ে বললেন, ‘হে ধনঞ্জয়
! এখন তোমাকে রোষপরবশ দেখে নিশ্চয় জানলাম যে, তুমি যথাকালে জ্ঞানবৃদ্ধ ব্যক্তির উপদেশ গ্রহণ কর নি। তুমি ধর্মভীরু; কিন্তু ধর্মের
প্রকৃত তত্ত্ব সম্যক অবগত নও। ধর্মজ্ঞ ব্যক্তিরা
কখনও এ প্রকার কাজে প্রবৃত্ত হন না। আজ তোমাকে এরূপ অকার্যে
প্রবৃত্ত দেখে মূর্খ বলে মনে হচ্ছে। যে ব্যক্তি অকর্তব্য
কার্যকে কর্তব্য এবং কর্তব্য কার্যকে অকর্তব্য বলে স্থির করে, সে নরাধম। বহুদর্শী পণ্ডিতগণ
ধর্মানুসারে যে উপদেশ প্রদান করে থাকেন, তা তুমি অবগত নও। দেখ—মানুষ কোন প্রকারেই
অনায়াসে কর্তব্য ও অকর্তব্য বুঝতে পারে না; কিন্তু বৃদ্ধোপদেশ শুনে সকলেই বুঝতে পারে। সুতরাং তুমি
সে বৃদ্ধোপদেশ না শোনায় বুঝতেছ না। অর্জুন ! তুমি ধর্মবিৎ হতে গিয়ে ধর্ম না বুঝে যে ধর্ম রক্ষা করার
ইচ্ছা করছ, (তাতে বলছি-) তুমি ধার্মিক
হয়েও প্রাণিবধ যে কী (ধর্মজনক না অধর্মজনক) তা বুঝতেছ না। আমার মতে, প্রাণিবধ না করাই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম। বরং মিথ্যা কথা বলবে, কিন্তু কোন
প্রাণিহিংসা করবে না।
প্রাণিনামবধস্তাত ! সর্বজ্যায়ান্ মতো মম।
অনৃতাং বা বদেদ্বাচং ন তু হিংস্যাৎ
কথঞ্চন ৼ-মভা, কর্ণ, ৫১।২২
নরশ্রেষ্ঠ ! অন্য নীচলোকের ন্যায়
তুমি—জ্যেষ্ঠভ্রাতা, রাজা ও ধর্মজ্ঞ যুধিষ্ঠিরকে কি করে বধ
করবে? ... পূর্বে বাল্যকালে ধর্ম না জেনে তুমি যে ভীষণ প্রতিজ্ঞা করেছ, ধর্মের
সূক্ষ্ম গতি জানলে তুমি তা কখনই করতে না। কুরুপিতামহ ধর্মজ্ঞ ভীষ্ম, ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির,
বিদুর ও যশস্বিনী কুন্তী যে ধর্মরহস্য বলতে পারেন, আমি যথার্থরূপে তোমার নিকট তা-ই
বলব। অতএব ধনঞ্জয় ! তুমি এই কথাগুলো শোন---
সত্যস্য
বচনং সাধু ন সত্যাদ্বিদ্যতে পরম্।
তত্ত্বেনৈব
সুদুর্জ্ঞেয়ং পশ্য সত্যমনুষ্ঠিতম্ ৼ-মভা, কর্ণ, ৫১।৩০
সত্য বলা ভাল। কেন না, সত্য
অপেক্ষা উত্তম নাই। কিন্তু সজ্জনের অনুষ্ঠিত সেই সত্যকে যথার্থরূপেই অতিদুর্জ্ঞেয়
বলে জানবে।
ভবেৎ সত্যমবক্তব্যং বক্তব্যমনৃতং
ভবেৎ।
যত্রানৃতং ভবেৎ সত্যং
সত্যঞ্চাপ্যনৃতং ভবেৎ ৼ-মভা, কর্ণ, ৫১।৩১
যে স্থলে মিথ্যা বলাটা সত্য বলার
ন্যায় উপকারী হয়, কিংবা সত্য বলাটা মিথ্যা বলার তুল্য অপকারী হয়ে পড়ে; সে স্থলে
সত্য বলবে না, মিথ্যাই বলবে।
... যে সত্য ও অসত্যের বিশেষ মর্ম অবগত না হয়ে,
সত্যানুষ্ঠানে সমুদ্যত হয়, সে নিতান্ত বালক, আর যিনি সত্য ও অসত্যের বিশেষ মর্ম
জানেন, তিনি যথার্থ ধর্মজ্ঞ ।”
সত্য-অসত্যের বিশেষ মর্ম কি অর্থাৎ
সত্য কখন মিথ্যাস্বরূপ হয় এবং মিথ্যা কখন সত্যস্বরূপ হয়, তা বুঝাবার জন্য বলাক ও
কৌশিকের বৃত্তান্ত শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে শুনালেন।
বাসুদেব বললেন, ‘হে ভরতনন্দন ! পূর্বকালে ‘বলাক’ নামে এক ব্যাধ ছিল। সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও বৃদ্ধ মাতা-পিতা, স্ত্রীপুত্রাদি ও অন্যান্য আশ্রিত ব্যক্তিদের
ভরণ-পোষণের জন্য পশুবধ করত। সে ছিল নিজধর্মে
নিষ্ঠাবান, সত্যবাদী ও অসূয়াশূন্য। একদিন সে বনে গিয়ে অনেক চেষ্টা করেও কোন শিকার পেল না; ক্রমে ঘ্রাণদৃষ্টি
তথা অন্ধ একটা হিংস্র জন্তুকে জল পান করতে সে দেখতে পেল। এরুপ জন্তু সে আগে কখনও
দেখেনি। তবুও সে জন্তুটাকে বধ করল। কিন্তু অন্ধ জন্তুটাকে বধ করলে পর আকাশ হতে
বলাকের মস্তকে পুষ্পবৃষ্টি পতিত হল। ক্রমে বলাককে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বর্গ হতে
অপ্সরোগণের গীত-বাদ্যে মুখরিত একখানা সুন্দর বিমান আগমন করল। হে অর্জুন ! সেই
জন্তুটা তপঃপ্রভাবে বর লাভ করে প্রাণিগণের বধের কারণ হওয়ার জন্য বিধাতা তাকে অন্ধ
করেছিলেন। আর সমস্ত-প্রাণি-বিনাশে কৃতনিশ্চয় সেই জন্তুটাকে বধ করে বলাক স্বর্গে
গিয়েছিলেন। এই কারণে ধর্ম অতিদুর্জ্ঞেয়।
তপস্বী অথচ অল্পজ্ঞ সেই ব্রাহ্মণ
কৌশিকও গ্রামের নিকটবর্তী কয়েকটি নদীর সঙ্গমস্থলে বাস করতেন। ‘আমি সর্বদাই
সত্যবাক্য বলব’ এরূপ তার ব্রত ছিল। সুতরাং অর্জুন ! তিনি তখন সত্যবাদী বলে বিখ্যাত
ছিলেন। একদিন কতকগুলো লোক দস্যুর ভয়ে এসে কৌশিকের তপোবনে প্রবেশ করল। তখন দস্যুরাও
তপোবনে এসে লোকগুলোর খোঁজ করতে লাগল। ক্রমে সেই দস্যুরা সত্যবাদী কৌশিকের নিকট এসে
বলল—‘ভগবন্ ! বহুতর লোক কোন্ পথে গেল?
আমরা জিজ্ঞেস করছি, আপনি সত্য বলুন। আপনি যদি তাদের সংবাদ জেনে থাকেন, তবে আমাদের
নিকট বলুন’। তখন কৌশিক তাদের নিকট সত্য কথা বললেন। ‘সেই লোকগুলো এসে বহু বৃক্ষ,
লতা ও গুল্মে পরিপূর্ণ এই বনে আশ্রয় নিয়েছে’। অর্জুন ! কৌশিক এভাবে দস্যুদের নিকট
সেই লোকগুলোর কথা বললেন। তারপর সেই দস্যুরা এসে সেই লৌকগুলোকে হত্যা করল—এই আমরা শুনেছি।
পরে যথাকালে সূক্ষ্মধর্ম বিষয়ে অনভিজ্ঞ, অল্পজ্ঞ, মূঢ় ও ধর্মভেদ জ্ঞানশূন্য সেই
কৌশিক ঐ দুষ্টবাক্যজনিত কারণে নরহত্যার গুরুতর পাপে কষ্টজনক নরকে গমন করেছিলেন।
হে অর্জুন ! ধর্ম নির্ণয়ে
অনভিজ্ঞ, অল্পবিদ্য ব্যক্তি জ্ঞানবৃদ্ধদের নিকট সন্দেহ ভঞ্জন না করে ঘোরতর নরকে
নিপতিত হয়। ধর্ম ও অধর্মের তত্ত্ব নির্ণয়ের বিশেষ লক্ষণ নির্দিষ্ট আছে। কোন কোন
স্থলে অনুমান দিয়েও নিতান্ত দুর্বোধ্য ধর্মের নির্ণয় করতে হয়। অল্পজ্ঞ লোক কেবল
তর্কদ্বারাই দুষ্কর পরম জ্ঞান লাভ করার চেষ্টা করে; আবার এক শ্রেণির বহুলোক ‘বেদ
হতেই ধর্ম জানা যায়’ এই কথা বলে। কিন্তু আমি তোমার নিকট এই দুই মতের উপরেই কোন
দোষারোপ করি না। তবে বেদ সমস্ত ধর্মের বিধান করে না। এ জন্যই মুনিরা প্রাণিগণের
মঙ্গলের জন্য প্রকৃষ্টরূপে ধর্ম বলেছেন।
যৎ স্যাদহিংসাসংযুক্তং স ধর্ম্ম
ইতি নিশ্চয়ঃ।
অহিংসার্থায় ভূতানাং
ধর্ম্মপ্রবচনং কৃতম্ ৼ-মভা, কর্ণ, ৫১।৫৬
আমার নিশ্চিত মত এই যে, যে কার্যে হিংসা থাকে
না, তা-ই ধর্মকার্য। মুনিরাও প্রাণিগণের হিংসা না হওয়ার জন্য প্রকৃষ্টরূপে ধর্ম
বলেছেন।
ধারণাদ্ধর্ম্মমিত্যাহুর্ধর্ম্মো
ধারয়তে প্রজাঃ।
যৎ স্যাদ্ধারণসংযুক্তং স ধর্ম্ম
ইতি নিশ্চয়ঃ ৼ-মভা, কর্ণ, ৫১।৫৭
মনীষীরা বলেন—‘ধর্ম মানুষগণকে
রক্ষা করে। সুতরাং সেই রক্ষাবশতঃ তাকে ধর্ম বলে। অতএব এটাই নিশ্চয় যে, যা রক্ষা
করে তা-ই ধর্ম।
‘আত্মসন্তোষবিধানই ধর্ম’-এই মনে
করে যারা অন্যায্যভাবে পরের ধন প্রভৃতি হরণ করার ইচ্ছায়
তাকেই ধর্ম মনে করে এবং পবিত্র গ্রন্থ বেদ এ কথিত না থাকলেও ‘তর্ক দ্বারাই মুক্তি হতে
পারে’ এরূপ বলে, এধরনের মানুষের সাথে কোন সৎ ব্যক্তি কথাও বলবেন না। অন্যের আশঙ্কা
হতে পারে বলে অবশ্যই বলতে হলে, সে ক্ষেত্রে মিথ্যা বলাই ভাল। কেন না, মিথ্যা সেই অবিচারিত
সত্য স্বরূপ। যিনি কার্যের জন্য মুখে নিয়ম করে কার্যে তা না করেন, তিনি সে নিয়মের ফল
পান না, এরূপই জ্ঞানীরা বলেন। প্রাণবিনাশ, বিয়ে, সমস্তজ্ঞাতিবধ ও সর্বতোভাবে আরব্ধ
কার্যে মিথ্যা বললেও তা মিথ্যোক্তিস্বরূপ হয়
না। মানুষ মিথ্যা শপথ করেও দস্যুদের আক্রমণ হতে যে মুক্তি লাভ করে, তাতে ধর্মতত্ত্বার্থদর্শীরা
অধর্ম দেখতে পান না। সুতরাং সে স্থলে মিথ্যা বলাই ভাল। কেন না, সে মিথ্যা অবিচারিত
সত্যস্বরূপ। কিন্তু শক্তি থাকতে কোন প্রকারেই তাদের ধন দিবে না। কারণ, পাপিগণকে ধন
দান করলে, তা দাতারও পীড়া উৎপাদন করে। অতএব মানুষ ধর্মের জন্য মিথ্যা বলে মিথ্যা বলার
পাপে লিপ্ত হয় না। অর্জুন ! আমি যুক্তি অনুসারে তোমার নিকটে এই মিথ্যা ও সত্যের লক্ষণ
বললাম; এ শুনে বল দেখি- যুধিষ্ঠির তোমার বধ্য হন কি-না’। মভা,
কর্ণ, ৫১।৫৮-৬৫
............. হে অর্জুন ! অতএব
যুধিষ্ঠির বধ্য হতে পারেন না; অথচ তোমারও প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে হবে অতএব তিনি
জীবিত থেকেই মরে যান, তোমার অনুরূপ তা আমার নিকট শ্রবণ কর। সম্মানযোগ্য লোক যখন
সম্মান লাভ করেন, তখনই তিনি জীবিত থাকেন; আর যখন গুরুতর অপমান ভোগ করেন, তখন তাকে
জীবন্মৃত বলা হয়। সুতরাং অর্জুন ! তুমি, ভীমসেন, নকুল ও সহদেব তোমরা সবাই এই রাজার
সম্মান করে থাক এবং সমাজের বৃদ্ধলোক ও বীরপুরুষেরাও তাঁকে সম্মান করে থাকেন অতএব
এখন তুমি তাঁকে অণুমাত্র অপমানিত কর। ভরতনন্দন অর্জুন ! তুমি পূজনীয় যুধিষ্ঠিরের
প্রতি ‘তুমি’ এরূপ উক্তি কর। কারণ, গুরুজনকে ‘তুমি’ বললেই তিনি নিহত হয়ে থাকেন।
কুন্তীনন্দন ! তুমি এরূপই কর, কৌরবশ্রেষ্ঠ ! তুমি ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরের প্রতি এরূপ
অধর্মযুক্ত বাক্য প্রয়োগ কর। শ্রুতির মধ্যে এই উত্তম শ্রুতিটি অথর্বা ও অঙ্গিরা
বলেছেন। সুতরাং মঙ্গলকামী লোকেরা কোন বিচার না করেই তা পালন করবেন। ধর্মজ্ঞ অর্জুন
! প্রভাবশালী গুরুজনকে যে ‘তুমি’ বলা তা-ই তাঁর পক্ষে অবধে বধ। মভা, কর্ণ,
৫১।৭৮-৮৪
তথ্যসূত্র :
১. মহাভারতম্, শ্রীমদ্ হরিদাসসিদ্ধান্তবাগীশ ভট্টাচার্য্য,
বিশ্ববাণী প্রকাশনী, দ্বিতীয় (বিশ্ববাণী) সংস্করণ, কলিকাতা-৯, ১৩৯২ বঙ্গাব্দ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন