কাব স্কাউটসের কয়েকটি পারদর্শিতা ব্যাজ সমাধান
পারদর্শিতা ব্যাজ : খেলনা
তৈরি
খেলনা তৈরি : শিশুরা খেলনা নিয়ে খেলতে ভালবাসে। নিজেদের খেলনা নিজেরা
তৈরি করেও প্রচুর আনন্দ পেয়ে
থাকে। প্রশিক্ষণ সহযোগিতা এবং একটু চেষ্টা করলেই কাবেরা নিজেদের খেলনা সহজেই তৈরি করতে পারে। কাবেরা ‘‘খেলনা তৈরি’’ পারদর্শিতা ব্যাজটি তারা ব্যাজ স্তরে অর্জন করতে হয়। এ ব্যাজটি অর্জন করতে হলে নিম্নলিখিত
খেলনাসমূহ তৈরি করা শিখতে হয়।
ক) একটি ঘুড়ি/কাপড়ের পুতুলতৈরি করতে পারা;
খ) কাগজের ফুল তৈরি করতে পারা;
গ) যে কোন জিনিসের সাহায্যে ২টি খেলনা তৈরি করতে পারা।
১. ঘুড়ি তৈরি :
উপকরণ : ১ ফুট লম্বা ও ১০ ইঞ্চি চওড়া পাতলা রঙ্গিন কাগজ, চিকন বাঁশের
কঞ্চি ২টি, গাম ও .৫০ ইঞ্চি চওড়া ও ০.৭৫ ইঞ্চি লম্বা কাগজের টুকরা ৫টি।
ঘুড়ি তৈরি করার পদ্ধতি
: ঘুড়ি তৈরি করার জন্য পাতলা কাগজ উপরে বর্ণিত মাপ অনুযায়ী কেটে নিতে হবে। বাঁশের কঞ্চি চিকন এবং পাতলা করে চেছে নিয়ে একটি কাগজের মাঝখানে
লম্বালম্বিভাবে আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিতে হবে। এবার ছোট ছোট তিনটি কাগজের টুকরায় গাম
দিয়ে ঘুড়ির চূড়ায়, নীচে এবং মাঝখানে
কঞ্চির উপর সেঁটে দিতে হবে। যাতে কঞ্চিটি সহজে ঘুড়ির কাগজ থেকে আলগা হয়ে যেতে না
পারে। এবার অপর কঞ্চিটি ধনুকের মত বাকিয়ে কাগজের চওড়া প্রান্তদ্বয়ের কোনায়
গাম দিয়ে লাগিয়ে ছোট দুই টুকরা কাগজ গাম দিয়ে সেঁটে দিতে হবে যাতে ছুটে না যায়। তৈরি হয়ে গেল উড়ানোর জন্য রঙ্গিন ঘুড়ি।
২. কাপড়ের পুতুল তৈরি :
উপকরণ : কাপড়,
সূঁই-সূতা, তুলা বা কাপড়ের টুকরা,
কাঁচি ও রং-তুলি।
তৈরি করার কৌশল
: প্রয়োজনীয় সাইজের একটি কাপড় দুই ভাঁজ করে যে জিনিসের পুতুল তৈরি করতে হবে বলপেন দিয়ে
আউট লাইনের সাহায্যে তার ছবি আঁকতে হবে। এবার আউটলাইন
বরাবর সুঁই-সূতা দিয়ে রানিং ফোঁড় বা রান সেলাই করার পর সেলাইয়ের বাইরে
আউট লাইন বরাবর কেটে আলাদা করতে হবে। এভাবে পুতুলের খোলস তৈরি হল, এবার রান সেলাইয়ের কিছু অংশের সেলাই খুলে খোলসটি
উল্টে ভিতরের অংশ বাইরে এবং বাইরের অংশ ভিতরে নিয়ে তুলার আঁশ ছোট ছোট করে খোলসের ভিতর ঢুকিয়ে ভর্তি করতে হবে। এভাবে
পুতুলের প্রত্যেক অংশে তুলা ভরাটের কাজ শেষ হলে খোলা মুখটি সেলাই করলে হৃষ্টপুষ্ট
একটি পুতুলের আকৃতি তৈরি হয়ে গেল। রং-তুলি দিয়ে
পুতুলের চোখ, নাক, ঠোট, ভ্রু এঁকে দেয়া যেতে পারে।
রং-তুলির পরিবর্তে তুলা বা ছোট কাপড়ের টুকরা এ কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যত সূক্ষ্ম ও পরিপাটিভাবে কাজ করা হবে পুতুল ততটাই সুন্দর ও আকর্ষণীয় হবে।
খ) কাগজের ফুল
তৈরি করতে পারা।
কাগজের জবা ফুল তৈরি :
উপকরণ : চিকন করে কেটে
নেয়া বাদামী রংয়ের এক টুকরা কাগজ, সবুজ রংয়ের কাগজ, প্রমাণ সাইজের লাল রংয়ের একটি কাগজ, পেন্সিল, কাঁচি ও গাম।
জবা ফুল তৈরীর কৌশল : বাদামী রংয়ের
কাগজের টুকরার এক প্রান্ত ১নং চিত্রের অনুরূপভাবে
কাঁচি দিয়ে খুব ছোট
দৈর্ঘ্যে ফালি করে কাটতে হবে। এবার কাগজটিকে লম্বালম্বিভাবে চিকন পাইপের আকারে
গুটিয়ে গাম লাগাতে হবে যেন খুলে না
যায়। ধরা যাক পাইপের উপরের অংশ ফুলের পরাগদন্ড এবং অপর অংশ বোটাসহ কাণ্ড। এরপর সবুজ রংয়ের কাগজটি ২নং চিত্রের আকারে কেটে ফুলের বৃতি তৈরি করতে হবে। এ পর্যায়ে লাল রংয়ের কাগজটি পাঁচ পরতে ভাঁজ
করে উপরের পরতের উপর ৩নং চিত্রের অনুরূপ অংকন করে কাঁচি দিয়ে কেটে নিলে জমা ফুলের পাঁচটি পাঁপড়ি পাওয়া গেল। ফুলের বিভিন্ন অংশ তৈরি হলো। এবার
যথাস্থানে গাম দিয়ে লাগানোর কাজ।
প্রথমে লাল কাগজের তৈরি পাঁপড়িসমূহের নিচের অংশে গাম লাগিয়ে পূর্বে বর্ণিত পরাগদন্ড এবং কাণ্ডের মিলিত অংশে পাশাপাশি এমনভাবে লাগাতে হবে যেন পরাগধানী উপরের দিকে এবং কাণ্ড নিচের
দিকে থাকে। এরপর সবুজ রংয়ের কাগজ দিয়ে তৈরি বৃতিতে গাম লাগিয়ে পাঁপড়িগুলোর নিচে জোড়া স্থানে লাগিয়ে
দেয়ার পর কাণ্ডের অবশিষ্টাংশ কেটে বাদ
দিলেই শেষ হয়ে গেল কাগজের জমা ফুল তৈরির কাজ।
আসলে হাতে কলমে ফুল তৈরি করা যতটা সহজ, তৈরি প্রণালী ভাষায় ব্যক্ত করা ততটা সহজ নয়। তাই বার বার
অনুশীলনের মাধ্যমেই কেবল কাবেরা
পারদর্শিতা অর্জন করতে পারবে।
খ) যে কোন
জিনিসের সাহায্যে ২টি খেলনা তৈরি করতে পারা।
১. তালপাতার
সেপাই
উপকরণ : তালপাতা
বা শক্ত আর্ট পেপার, সুই-সূতা, কাঁচি, রং-তুলি।
তৈরি করার কৌশল : একখণ্ড চওড়া তালপাতা অথবা কাগজের বোর্ডে একটি সিপাহীর কার্টুন এঁকে (আউট লাইন দিয়ে) আউট
লাইন বরাবর প্রথমে মাথা থেকে কোমরের অংশ পর্যন্ত এবং পরে হাত ও পা আলাদাভাবে কেটে নিতে হবে। অতঃপর সুই-সূতা দিয়ে দুই হাত দুই কাঁধের সাথে এবং দুই পা কোমড়ের দুই পাশে এমনভাবে লাগাতে হবে
যাতে একটু নড়াচড়াতেই হাত-পা-দুলতে থাকে। হাত-পা জুড়ে দেয়ার পর একটি বাঁশের কঞ্চির
মাথা দুইভাগ করে সেপাইটিকে ফাঁকের মধ্যে ঢুকিয়ে সূতা দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। এবার রং-তুলি দিয়ে চোখ, মুখ, প্যান্ট-সার্ট, বুট
ইত্যাদি এঁকে দিকে হবে। তৈরি হয়ে গেল মজার একটি খেলনা। আংগুলের সাহায্যে বাঁশের
কাঠিটি ঘোরালেই সিপাহী হাত-পা ছুঁড়ে মজার মজার অঙ্গভঙ্গি করবে।
২. চরকি
উপকরণ :
ভিন্ন ভিন্ন রংয়ের দুই টুকরা কাগজ, বাঁশের চিকন শলা, ছুরি, কাঁচি, গাম ইত্যাদি
তৈরি করার কৌশল
: একটি কাগজে দুইটি ছোট বৃত্ত একে বৃত্ত দুটি কেটে
নিতে হবে। ৪/৪.৫ ইঞ্চি বর্গাকার একখন্ড রঙ্গিন কাগজ নিয়ে কাগজের দু-পার্শ্বে মাঝ
বরাবর গাম দিয়ে সেটে দিতে হবে। এবার বর্গাকার কাগজের চারটি প্রান্ত
থেকে কেন্দ্রের দিকে বৃত্তের রেখা
পর্যন্ত সোজাসুজি কাঁচি দিয়ে
কাটলে বর্গাকার কাগজটি চার ভাগ হল। কাগজের বৃত্তের কেন্দ্র বরাবর ফোঁড় দিয়ে চিকন
বাঁশের তৈরি শলা ঢুকানোর পর প্রত্যেক ভাগের একটি প্রান্ত
সমান মাপে ছিদ্র করে শলায় ঢুকালেই
চরকি তৈরি হয়ে গেল। চিকন শলার
এপাশ এবং ওপাশ বরাবর গাম দিয়ে কাগজ পেঁচিয়ে দিতে হবে যাতে চরকিটি শলার কোন পাশ
দিয়ে বের হয়ে যেতে না পারে। বাতাসের ছোঁয়ায় ঘুরতে শুরু করবে মজার চরকি।
পারদর্শিতা ব্যাজ : মডেল
তৈরি
কাবের
পারদর্শিতা ব্যাজ ‘‘মডেল তৈরী’’ ব্যাজটি চাঁদ ব্যাজ স্তরে অর্জন করতে হয়। গাছের পাতা, বাঁশ, বেত, কাপড়,
হার্ডবোর্ড, পিসবোর্ড, কাদামাটি, মোম, সাবান, পাট ও ককসিট ইত্যাদি দিয়ে সহজেই মডেল
তৈরী করা সম্ভব।
১. মাটির তৈরী
আম
উপকরণ : কাদামাটি, ছুরি বা চাকু, রং ও তুলি।
তৈরি করার কৌশল
: মাটির মডেল তৈরি করতে হলে উপযুক্ত মাটি দরকার। এক্ষেত্রে এটেল দোআঁশ
মাটি সব চাইতে উত্তম। এটেল মাটি ও
দোআঁশ মাটি সমান সমান অনুপাতে
মিশিয়ে মডেল তৈরির উপযোগী মাটি তৈরি করে নিতে হয়। এটেল দোআঁশ
মাটি টুকরা টুকরা করে ভালভাবে
শুকিয়ে চালের গুঁড়ার মত গুঁড়া করে একটু একটু পানি মিশিয়ে আটার খামিরের মত নরম দলা
তৈরি করতে হয়। এমনভাবে করতে
হবে যেন মাটি একদম নরম বা শক্ত না থাকে কিন্তু আংগুলের চাপে সহজেই মাটির দলার
আকৃতি বদলে যায় অথচ হাতে মাটিও না আটকায়। মাটির দলা ভালোভাবে চেপে চেপে মাটির
ভেতরকার বাতাস বের করে কাজের উপযোগী করে মাটি তৈরী করে নিতে হবে। মাটি দিয়ে আম তৈরি করতে হলে প্রয়োজনীয় পরিমাণ মাটির দলা নিয়ে দু’হাতে চেপে চেপে আমের আকৃতি করতে হবে।
দলটি আমের আকৃতি লাভ করলে একটি ছোট কাঠিতে কিছু মাটি লেপটে দিয়ে বোটা তৈরি করে বোটাস্থানে গেঁথে দিতে হবে। কিছুটা শুকিয়ে গেলে
ছুরি বা চাকু দিয়ে চেছে মসৃণ করার পর রং-তুলি
দিয়ে রুচিমত প্রকৃতি অনুসারে মডেলটি আরো আকর্ষণীয় করা যাবে।
২. পেপার ওয়েট
উপকরণ
: একটি অকেজো বৈদ্যুতিক বাল্ব, বিভিন্ন রংয়ের কিছু
সংখ্যক অকেজো বলপেন, হ্যান্ডেলযুক্ত ক্লিপ ও স্পিরিট ল্যাম্প বা চুলা।
তৈরি করার কৌশল :
আমাদের চারিপাশে অনেক অকেজো ও অপ্রয়োজনীয় এবং পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি যত্রতত্র পড়ে
থাকে। সেই সমস্ত দ্রব্যাদি দিয়েও অনেক
মডেল তৈরি করা যায়। অকেজো
বৈদ্যুতিক বাল্ব ও কালি ফুরিয়ে যাওয়া অকেজো বলপেন দিয়ে কাবেরা অনায়াসে পেপার ওয়েট তৈরি করতে পারে।
একটি অকেজো বাল্ব নিয়ে বাল্বের পেছনের অংশ (যে অংশটি
হোল্ডারের সাথে যুক্ত করা হয়) দা এর মাথা দিয়ে খুটিয়ে ভেংগে ফেলতে হবে। বিভিন্ন
রংয়ের কয়েকটি অকেজো বলপেন টুকরা করে কেটে নিতে হবে। টুকরা করা বলপেন বাল্বের মধ্যে
ঢুকিয়ে আগুনে গরম করলে বলপেনের টুকরা গলে তরল হতে থাকবে। এভাবে বাল্বের অর্ধেক অংশ ভর্তি হওয়ার পর আগুন
নিভিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। বাল্বের মধ্যে গলিত পদার্থ ঠান্ডা হয়ে জমে যাওয়ার পর
বাল্বটি ভেংগে ফেললে বের হয়ে আসবে বহুবিধ রংয়ের একটি সুন্দর পেপার ওয়েট।
মডেল তৈরী
কাবিং এ মডেল তৈরি তার জন্য একটি দক্ষতার পরিচয়। এ জন্য কাবদের জন্য
বিষয়টিকে দক্ষতা ব্যাজের মধ্যে রাখা হয়েছে। গাছের পাতা, বাঁশ, বেত, কাপড়, কাগজ,
হার্ডবোর্ড, পিসবোর্ড, কাদামাটি, মোম, সাবান, পাট ইত্যাদির সাহায্যে এ মডেল প্রস্তুত করতে হবে।
ইউনিট লিডারগণ প্রয়োজনে এ বিষয়ে দক্ষ এমন একজনের সহায়তা নিতে পারেন।
নমুনা হিসেবে একটি ভাসমান নৌকার মডেল তৈরির কৌশল নিম্নে বর্ননা করা হলোঃ
উপকরণ :
খালি প্লাস্টিকের বোতল, মার্কার, প্লাস্টিক টেপ, প্লাস্টিক
(বিভিন্ন রং এর), বড় রাবার ব্যান্ড, ছুরি, বাঁশের চিকন কঞ্চি।
কৌশল :
১। একই
মাপের দুটো খালি বোতলের লেবেল অপসারন
করতে হবে।
২। মার্করের
সাহায্যে বোতল দুটোকে ডেকোরেট করতে হবে
৩। রাবার
ব্যান্ড দিয়ে বোতল দুটোকে আটকাতে হবে এরপর প্লাস্টিক টেপ দিয়ে বোতল দুটোকে ভাল ভাবে পেঁছাতে হবে
৪। বাঁশের
কঞ্চি ঢুকিয়ে রঙ্গিন প্লাস্টিক দিয়ে পাল বানাতে
হবে
৫। ছুরি
দিয়ে সন্নিবেশিত বোতলদ্বয়ের উপরের অংশ ডিম্বাকৃতিতে কাটতে হবে এবং পালটি সুবিধামত
আটকাতে হবে
৬। এটা দেখতে এখন নৌকার মত হবে, মনে রাখতে হবে
কোন অবস্থাতেই বোতলের মুখ খোলা যাবেনা. এখন এটাকে পানিতে ভাসানো যাবে।
চিত্র
এটা একটা নমুনা মাত্র ইউনিট লিডার তার দক্ষতা প্রয়োগ করে এ ধরনের আরো অনেক
মডেল তৈরির কৌশল কাবদের শিখাবেন।
পারদর্শিতা ব্যাজ : হস্ত
লিপি
হস্ত
লিপি : মানুষ পরস্পরের মধ্যে ভাব বিনিময়ের জন্য ভাষা
ব্যবহার করে থাকে। ভাষার ব্যবহার দুই প্রকার, মৌখিক এবং লিখিত। আর এর বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর
অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে সঠিক উচ্চারণ বা বাচন ভংগি ও সুন্দর হস্তাক্ষর। যে সুন্দরভাবে কন্ঠ ও ঠোঁট ব্যবহার করে ভাষাকে মাধুর্য্য মণ্ডিতভাবে
প্রকাশ করবে তার মনের ভাব ততটাই আকর্ষণীয় ও প্রাঞ্জল হবে। তাছাড়া মানুষের রুচিবোধ,
সৌন্দর্যবোধ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা তার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে । তাই সোনামনি
কাবদেরকে ছোটবেলা থেকেই এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে এবং এর মূল দায়িত্ব কাব
লিডারের।
লেখার মাধ্যমে দূরের বা কাছের সব মানুষের সংগে মনের ভাব
বিনিময় সহজ ও গোছালো হয়ে থাকে। সুতরাং একজন কাবের হাতের লেখা স্পষ্ট, পরিস্কার ও
সুন্দর হওয়া অত্যন্ত জরুরী। সঠিক উপকরণ ব্যবহারের
মাধ্যমে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ এবং নিয়মিত অনুশীলন করে হাতের লেখা ভালো করা যায়।
লেখনীতে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য বজায় থাকলে একজন কাব সুন্দর হস্তাক্ষরের অধিকারী হতে পারে।
১। প্রতিটি
বর্ণ সমান আকারের হতে হবে;
২। প্রতিটি
বর্ণের গঠন সঠিক, স্পষ্ট ও সুন্দর হতে হবে;
৩। প্রতিটি
বর্ণ, শব্দ ও বাক্য পঠনযোগ্য হতে হবে;
৪। প্রতিটি
বর্ণ এবং শব্দের মধ্যকার ফাঁক সমান হতে হবে;
৫। প্রতিটি
লাইন সোজা হতে হবে;
৬। লেখার
মার্জিন পরিমিত ও সোজা হতে হবে;
৭। লেখার
উপকরণসমূহ সঠিক ও ক্রুটিমুক্ত হতে হবে।
কাবের চাঁদ ব্যাজ স্তরের পারদর্শিতা ব্যাজ অর্জন করতে হলে নিম্নলিখিত কার্যক্রম করতে
হবে।
K)
সূক্ষ্ম পেন্সিল, স্কেল বা অন্য কিছুর
সাহায্য ছাড়া সুন্দর করে সমান্তরাল ও লম্ব রেখা টানতে এবং বিভিন্ন
মাপের বৃত্ত আঁকতে পারা;
L)
বাঁশের কঞ্চি বা তুলির সাহায্যে
বাংলা ও ইংরেজি বর্ণমালাসমূহ সুন্দর করে লিখতে পারা;
M)
শিক্ষণীয় বাক্য ব্যবহার ও
যথাযথভাবে অক্ষর অনুসারে লাইন পূরণ করতে প্রতি সপ্তাহে ২ পৃষ্ঠা বাংলা ও ইংরেজি এই হিসেবে ১০ পৃষ্ঠা বাংলা ও ১০ পৃষ্ঠা ইংরেজি হাতের লেখা চর্চা করা;
N)
বাংলায় অন্ততঃপক্ষে
১০টি বাক্যের শ্রুতিলিপি গ্রহণ করে ৭৫% শুদ্ধ
ও সুন্দরভাবে লিখতে পারা।
পারদর্শিতা ব্যাজ : ক্রীড়া কুশলী ব্যাজ
কাবের ‘‘ক্রীড়া কুশলী’’ ব্যাজটি চাঁদ ব্যাজ স্তরে অর্জন করতে হয়। এ ব্যাজটি অর্জন করতে হলে নিম্নলিখিত
বিষয়ে পারদর্শি হতে হয়।
K)
আসনে বসা, দাড়ানো, হাঁটা বা দৌড়ানো
একটি শিল্পকর্ম। সময় এবং পরিবেশগত কারণে এর পরিবর্তন
লক্ষ করা যায়। সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে এ সমস্ত কাজ করা কাবদের শিখতে হবে।
L)
দৌড়ানো এবং দৌড় আরম্ভ করার সঠিক
পদ্ধতি তিনটি। যথা-
১। বান্স
স্টার্ট- এ সময় পিছনের পায়ের আংগুল সম্মুখের পায়ের গোড়ালীর কাছে থাকে। খাটো
দৌড়বিদরা এ স্টার্ট নিয়ে থাকে এবং এটাই দ্রুততম স্টার্ট বলে মনে করা হয়;
২। মিডিয়াম
স্টার্ট- এ সময় পিছনের পায়ের হাঁটু সামনের পায়ের আংগুল
বরাবর পাশে থাকে। আজকাল এটাই প্রিয় স্টার্ট
৩। এলংগেটেড
স্টার্ট- এ স্টার্টে পেছনের পায়ের হাঁটু সামনের পায়ের পাতার পার্শ্বে থাকে। লম্বা দৌড়বিদরা এ
স্টার্ট নিয়ে থাকে।
M)
নিম্নলিখিত তালিকা হতে যে কোন ৩টি
বিষয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারা-
১। ১০
সেকেন্ড ৪৫৭২.০০ সেন্টিমিটার দৌড়ানো;
২। উচ্চ
লাফে ৭৬. সেন্টিমিটার উচ্চতা অতিক্রম;
৩। দীর্ঘ
লাফে ১৮২.০০ সেন্টিমিটার দুরত্ব অতিক্রম;
৪। একটা
ক্রিকেট বল ছুঁড়ে ১৮২৮ সেন্টিমিটার দূরে থেকে ছোঁড়া কোন ক্রিকেট বল ধরতে
পারা।
উপরোক্ত কার্যক্রম পুনঃ পুনঃ অনুশীলন ব্যতিরেকে পারদর্শিতা অর্জন করা সম্ভব নয়।
তাই দক্ষ প্রশিক্ষকের অধীনে এ বিষয়ে চর্চা করতে হবে।
পারদর্শিতা ব্যাজ : চিত্ত
নিনোদন
মানুষের
শরীরকে চলমান অবস্থায় দু’ভাগে ভাগ করা যায়। তা হলো ‘‘তনু’’ ও ‘‘মন’’। এক ভাগ তনু
(যা অনুভব করা যায়) অপর ভাগ (যা প্রদর্শন যোগ্য) অর্থাৎ শরীর ও মন দুটোই সুস্থ
থাকলে তাকে সুখী বলা যায়। এর যে কোন একটি বিকল হলে কাজে উদ্যম বা উৎসাহ পাওয়া যায়
না, কাজের গতি থেকে যায়। ফলে সময়মত লক্ষ্যে পৌঁছান যায় না। স্কাউটিংয়ে কাব বয়সী থেকে রোভার বয়সী শিশু
কিশোর-যুবক যুবতীদের শরীর ও মন ঠিক রাখার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের ব্যবস্থা রাখা
হয়েছে, যেগুলো নিয়মিত অনুশীলন করলে অবশ্যই ফল পাওয়া যায়। যেমন-শরীর চাংগা রাখার
জন্য ‘‘চিত্ত বিনোদনের’’ উপর সমান গুরুত্ব
দেয়া হয়েছে। চিত্ত বিনোদনের বিভিন্ন বিষয় নিয়মিত অভ্যাস করলে ব্যক্তিগত ভাবে ও
সামাজিকভাবে দু’ দিকেই লাভবান হওয়া যায়।
একদিকে ব্যক্তিগত প্রতিভার বিকাশ দ্বিতীয়ত সামাজিকভাবে প্রশংসিত ও প্রতিষ্ঠিত
হওয়া। চিত্ত বিনোদনের বিভিন্ন শাখা রয়েছে যেমন-আবৃত্তি বিকাশ (ব্যক্তিগত ও বৃন্দ)
দেশজ সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে গান ( আঞ্চলিক, দেশাত্ববোধক, ভাটিয়ালী, পল্লীগীতি, ভাওয়াইয়া, লালনগীতি, আধ্যাত্মিক, নজরুল, রবীন্দ্র ও প্যারোডি
ইত্যাদি। গল্প, অভিনয়, নাচ, কৌতুক ও ক্যারিকেচার ইত্যাদি। উল্লেখ্য যে, স্কাউটিংয়ে চিত্ত বিনোদনের সফলতায় ‘‘পারদর্শিতা’’ ব্যাজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন