সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, বিবিধ

মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

শের শায়েরী

১.
চনমনে ইখতলাতে রঙো বুঁ সে বাৎ বন্তি হ্যায়
হামই হাম হ্যায় তো কেয়া হাম হ্যায়
তুমহি তুম হো তো কেয়া তুম হো। - সারসার সালানী

অনুবাদ- বাগানে যে ফুল ফোটে রঙ আর সুরভির মিলনেই তার সার্থকতা। তেমনি আমাদের দু’জনের মিলনেই আমাদের চরম মূল্যায়ন, আমাদের জীবনের পূর্ণতা। একা আমি তো অসম্পূর্ণ, একা তুমিও নেহাতই মূল্যহীনা।

২.
কভি ব্যয়ঠে বৈঠায়ে দিলকিঁ হালত এয়সি হোতি হ্যায়,
তড়পকর চ্যয়ন মিলতা হ্যায়, খুসি রোনেসে হোতি হ্যায়। -সারসার সালানী

অনুবাদ- কখনও কখনও মনের অবস্থা এমন হয় যে কৃচ্ছ্রতায়ই শান্তি লাভ হয়, অঝোর অশ্রুপাতেই আনন্দিত হয় চিত্ত।
ইস এতিয়াৎ কি ক্যা বরখ্ দাও দেতা হুঁ
কে তিন্কা তিন্কা বাঁচা মেরে আশিয়াঁকা সিবা। -সারসার সালানী

অনুবাদ- হে ঈশ্বর, তোমার নিপুণ সতর্কতার জন্য বাহবা দিতে হয়। তুমি আমার ঘর লক্ষ্য করে এমন বিদ্যুৎবহ্নি বজ্রবাণ নিক্ষেপ করেছো যে, শুধু আমারই ঘরটা জ্বলে খাক হয়ে গেল, বাকি কুটোকাঠির এতটুকুও ক্ষতি হল না।
মেরে তসবিঁকে দানে হ্যায় এ সারে হাসিন চেহরে,
নিগাহে ফিরতি যাতি হ্যায়, এবাদৎ হোতি যাতি হ্যায়। -সারসার সালানী

অনুবাদ- এই যে এত সুন্দরীদের মুখ এরা হল আমার পূজোর মালার এক একটি পুঁতি। একটার পর একটা মুখ দেখি আর আমার দৃষ্টির অঙ্গুলি দিয়ে নীরবে পূজো সেরে চলি।
এক উনওমা কা জরুরৎ হ্যায় কাহানীকে লিয়ে,
এক সদ্মা কে জরুরৎ হ্যায় জোয়ানীকে লিয়ে। -সারসার সালানী

অনুবাদ- যৌবনে একবার অন্তত আঘাত খাবার প্রয়োজন আছে। প্রেমের জন্য প্রেয়সীর কাছ থেকে একবার আঘাত না পেলে যৌবনের সোনা পবিত্র হয়ে ওঠে না। যেমন সম্পূর্ণ কাহিনীর জন্য একটি নামের প্রয়োজন হয়, তেমনি যৌবনের সম্পূর্ণতার জন্য প্রয়োজন হয় একটি আঘাতের।

ইকবাল
৬. আচ্ছা হ্যায় দিলকে পাস রহে পাসবানে-অকল্
    লেকিন কভি কভি ইসে তনহা ভী ছোড়িয়ে। -ইকবাল

অনুবাদ- হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস সেটা ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মাঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সবসময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।
৭. খুদহি কো কর বুলন্দ ইতনা কি হর তকদীর সে পহেলে
    খুদা বন্দে সে খুদ পুছে বতা তেরী রজা কেয়া হ্যায়? –ইকবাল


অনুবাদ- নিজেকে আত্মবিশ্বাসে শক্তিমত্তায় মহৎ করে তুলতে হয়। নিজেকে এমন হিমাদ্রীস্বরূপ সবল করে তুলো যে, তোমার ভাগ্য লিপি বানাবার আগে ঈশ্বর স্বয়ং তোমাকে প্রশ্ন করেন যেন, বলো, তোমার অভিপ্রায় কী, কী তোমার অর্জনের আকাঙ্ক্ষা, কী তোমার অধিকারের অভিলাষ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন